প্রকাশিত: ০৬/০৭/২০১৮ ১২:৪৭ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:০৬ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট::
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘ ও মিয়ানমারের এক সমঝোতা প্রত্যাখান করেছেন রোহিঙ্গা নেতারা। তারা জানান, সমঝোতায় তাদের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়নি এবং এটা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসানে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে না।

কয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না মিয়ানমার। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হওয়া এসব রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সঙ্গে মিয়ানমার চুক্তি স্বাক্ষর করলেও এখনও শুরু হয়নি প্রত্যাবাসন।

অনলাইনে সমঝোতা স্মারকের চুক্তিগুলা ফাঁস হওয়ার পর রোহিঙ্গা নেতা ও অধিকারকর্মীরা জানান, শরণার্থীদের মূল বিষয়টিই নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে চুক্তিটি। বাংলাদেশে বাস করা রোহিঙ্গা বিষয়ক অধিকার কর্মী কো কো লিন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এই সমঝোতাটি করা। অথচ অদ্ভূতভাবে কোনও রোহিঙ্গার সঙ্গেই আলোচনা করা হয়নি। সমাঝোতা স্বারকে কোনও নিশ্চয়তা নেই যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিবে। রোহিঙ্গারা এমন কিছু চায়নি।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে লিন বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই মিয়ানমার সরকারের কাছ থেকে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নিশ্চয়তা চাচ্ছিলাম। কিন্তু সমাঝোতা স্মারকে এমন কিছুর উল্লেখ না থাকায় আমরা হতাশ। এই দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তিতে সাফল্য আসবে না।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী তুন খিন বলেন, মিয়ানমার সরকার ও জাতিসংঘের এই সমঝোতার বিষয়ে কোনও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা না করার বিষয়টি অনৈতিক। তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন চুক্তির বিস্তারিত নিয়ে জানার অধিকার রয়েছে রোহিঙ্গাদের। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া, নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা, পুনর্বাসন, তাদের বাড়ি পুনঃনির্মাণ ও ভবিষ্যত সহ খুটিনাটি জানতে চাইবেন তারা। কিন্তু তেমনটা হয়নি। ফাঁস হওয়ার পর তারা সমঝোতার শর্তগুলো দেখে খুবই ক্ষুব্ধ। আর এই সমঝোতা উন্মুক্ত না করাতেও ক্ষোভ সঞ্চারিত হয়েছে তাদের মাঝে।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জায়েদ রাদ আল হোসেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেছেন বলে শোনা গেছে। মিয়ানমার যখন দাবি করে যে তারা মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে চায়। তখন রাদ আল হোসেন জবাবে বলেন, এই দাবি একদমই অযৌক্তিক। রাখাইনে সংঘটিত নিপীড়ন হত্যাযজ্ঞসহ যাবতীয় ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধে সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে বলেছেন তাদের লজ্জা হওয়া উচিত।

পাঠকের মতামত